গত কয়েক সপ্তাহ জুড়ে বাংলাদেশ এবং মায়ানমার সাইবার যুদ্ধ চলছে। এই সাইবার যুদ্ধ প্রতিদিনই অসংখ্য বাংলাদেশি এবং মায়ানমার বিভিন্ন ওয়েব সাইট হ্যাকিং এর শিকার হচ্ছে। বাংলাদেশি এবং মায়ানমার হ্যাকাররা একে অপরকে প্রতিহত করবার চেষ্টা করছেন। তবে এক্ষেত্রে বাংলাদেশি এবং মায়ানমার হ্যাকাররা যতটাই নিজেদেরকে জাহির করতে পেরেছে ঠিক ততটাই ক্ষতির শিকার হয়েছে উভয় দেশের সাধারণ মানুষ। মূলত যুদ্ধ কোন কিছুর সমাধান হতে পারে না। পারস্পারিক মূল্যবোধ এবং সুস্থ সিন্ধান্ত যুদ্ধ বদলে সঠিক সমাধান দিতে পারে।
--- Aluminium Security
Like us on facebook
বাংলাদেশ এবং মায়ানমার সাইবার যুদ্ধের সূত্রপাত:
এই সাইবার যুদ্ধের প্রধান কারণ মায়ানমার হ্যাকার গোষ্ঠী এবং মায়ানমার হ্যাকার গোষ্ঠী প্রথমে বাংলাদেশী ওয়েবসাইট হ্যাক করেছে বলে বাংলাদেশি হ্যাকাররা দাবি করেন।
১৯জুন, প্রথম অবস্থায় বিভিন্ন বাংলাদেশি হ্যাকার গোষ্ঠীর ফেসবুক পেইজ এবং গ্রুপে মায়ানমার হ্যাকার গোষ্ঠী কর্তৃক বাংলাদেশি ওয়েব সাইট হ্যাক হবার বিষয়টি জানানো হয়। এ ক্ষেত্র সাধারণ মানুষের চাপের মুখে এবং পালটা জবাব দিতে “বাংলাদেশ সাইবার আর্মি” সহ বিভিন্ন বাংলাদেশি হ্যাকাররা গোষ্ঠী মায়ানমার বেশ কিছু ওয়েব সাইট হ্যাক করে। এরই পরিপিক্ষিতে মায়ানমার হ্যাকার গোষ্ঠী পুনরায় বাংলাদেশের ওয়েবসাইট গুলোতে আক্রমণ চালায়। ফলে এটি একসময় সাইবার যুদ্ধের রূপ নেয়।
কিছু সন্দেহ:
যেহেতু বাংলাদেশি হ্যাকাররা গোষ্ঠী দাবি করেন মায়ানমার হ্যাকার গোষ্ঠী প্রথম বাংলাদেশী ওয়েবসাইট হ্যাক করেছিলেন তবে এ বিষয়ে এখনো যথেষ্ট পরিমাণ সন্দেহ রয়েছে। হ্যাকার গোষ্ঠী এই বাংলাদেশী ওয়েবসাইট গুলো হ্যাক করেছিলেন কি না তাতে সন্দেহ রয়েছে।
মায়ানমার, বাংলাদেশের প্রতিবেশী একটি দেশ এবং মায়ানমারের সাথে আমাদের দেশের রাজনৈতিক সম্পর্ক দৃশ্যমান অনেক ভাল। অপর পক্ষে এই সাইবার যুদ্ধের পূর্বে মায়ানমার হ্যাকার গোষ্ঠীর সাথে কোন প্রকারের যোগাযোগ হয়নি এবং যুদ্ধ প্রসঙ্গিত কোন তথ্য বা মতামত শেয়ার হয়নি।
এ প্রসঙ্গে অনেকেই ভারতকেই একমাত্র সন্দেহর চোখে দেখছেন। মায়ানমার সরকার এবং মায়ানমার হ্যাকার গোষ্ঠীর সাথে বাংলাদেশ সরকার এবং বাংলাদেশি হ্যাকার গোষ্ঠীর সাথে একটি মন্দ সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য এটি একটি ভারতীয় হ্যাকার গোষ্ঠীর একটি কু-পরিকল্পনা হতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন।
সাইবার যুদ্ধের ক্ষেত্রে মায়ানমার হ্যাকারদের উদ্দেশ্য:
বাংলাদেশ এবং মায়ানমার সাইবার যুদ্ধের উদ্দেশ্য এখনো অনেকটা ঘোলাটে। বাংলাদেশি বিভিন্ন হ্যাক হয়ে যাওয়া ওয়েবসাইটে মায়ানমার হ্যাকার গোষ্ঠী বাংলাদেশি সমুদ্র বিজয় বিষয়টি ইঙ্গিত করেছেন আবার অনেক ক্ষেত্রে “রহিঙ্গা” বিষয়টি তুলে ধরেছেন।
কিছু হ্যাক হওয়া ওয়েব সাইটে বাংলাদেশে রাখাইনদের প্রবেশের কথা বলা হয়েছে এবং বাংলাদেশ এ বিষয়ে সাহায্য করেনি দরুন এই সাইবার যুদ্ধে মায়ানমার হ্যাকারদের উদ্দেশ্য বলে মনে করা হচ্ছে।
সাইবার যুদ্ধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে হ্যাকারদের উদ্দেশ্য:
বাংলাদেশি হ্যাকার গোষ্ঠীর সাইবার যুদ্ধের উদ্দেশ্য অনেকটা স্পষ্ট। বাংলাদেশি হ্যাকার গোষ্ঠী দ্বারা বিভিন্ন হ্যাক হওয়া মায়ানমার ওয়েব সাইটে রহিঙ্গা বিষয়টি তুলে ধরেছেন।
মুসলমানদের হত্যা এবং মায়ানমার জাতি গত দাঙ্গা বন্ধ করতে এবং মায়ানমার সাইবার জগত বিধ্বস্ত করা বাংলাদেশে হ্যাকারদের প্রধান উদ্দেশ্য বলে মনে করা হচ্ছে।
সাইবার যুদ্ধের অন্যান্য দেশের অংশ গ্রহনঃ
বাংলাদেশ এবং মায়ানমার সাইবার যুদ্ধে ইতি মধ্যে মায়ানমার হ্যাকার গোষ্ঠীর সাথে ভারত অংশগ্রহণ করেছে বলে জানা যায়। ভারতীয় হ্যাকার গোষ্ঠী “ইন্ডিসেল” বাংলাদেশ এবং মায়ানমার সাইবার যুদ্ধে, মায়ানমারকে সাহায্য করছে বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতীয় হ্যাকার গোষ্ঠী “ইন্ডিসেল” এর বেশ কয়েকজন সদস্যদেরকে মায়ানমার বিভিন্ন হ্যাকার গ্রুপে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে।
অপর পক্ষে বাংলাদেশ এবং মায়ানমার সাইবার যুদ্ধে, বাংলাদেশ এর পক্ষে বেশ কয়েকটি দেশের হ্যাকার গোষ্ঠী এগিয়ে এসেছে। এদের মধ্যে সৌদি আরব হ্যাকার গোষ্ঠী, রাশিয়ান হ্যাকার গোষ্ঠী সহ বিভিন্ন দেশের হ্যাকার গোষ্ঠী বাংলাদেশ এর পক্ষে সাইবার যুদ্ধে এ অংশগ্রহণ করবে বলে জানিয়েছে।
সাইবার যুদ্ধের কৌশল এবং উভয় দেশের ক্ষতির প্রভাব:
বাংলাদেশ এবং মায়ানমার সাইবার যুদ্ধে বিভিন্ন হ্যাকিং কৌশল প্রয়োগ করা হচ্ছে। বাংলাদেশী হ্যাকার গোষ্ঠী বিভিন্ন মায়ানমার ওয়েব সাইটে বিভিন্ন পদ্ধতিতে সেল আপলোড করছে এবং সার্ভার রুট করছে। এর ফলে মাস ডিফেস করায় সার্ভারে অন্তর্ভুক্ত সকল প্রকার ওয়েব সাইট হ্যাকিং এর শিকার হচ্ছে। অনেকে আবার আটো রুট, স্যমলিঙ্ক, জাম্পিং সার্ভার সহ ম্যলওয়ারে স্ক্রিপ্ট বা এক্সপ্লইট ব্যবহার করেও মায়ানমার ওয়েব সাইট সমূহ হ্যাক করছে। কিছু কিছু বাংলাদেশী হ্যাকার গোষ্ঠী ভাইরাস ছড়ানোরও চেষ্টা করছেন। তবে সেগুলো যথেষ্ট ফলাফল দিতে পারছেনা বলে জানা যায়।
অপর পক্ষে মায়ানমার হ্যাকার গোষ্ঠী প্রায় একই রকমের কৌশল প্রয়োগ করছেন। বিভিন্ন বাংলাদেশী সরকারী ওয়েব সাইট দুর্বল এবং উন্মুক্ত সিএমএস দ্বারা ডেভেলপ হওয়ায় বিভিন্ন প্রকার ম্যলওয়ারে স্ক্রিপ্ট বা এক্সপ্লইট ব্যাবহার করে সেল আপলোড করছে এবং সার্ভার রুট করছে। ফলে একাধিক ওয়েব সাইট হ্যাকিং এর শিকার হচ্ছে।
সাইবার যুদ্ধে বাংলাদেশের প্রধান দূর্বলতাঃ
বাংলাদেশ এবং মায়ানমার সাইবার যুদ্ধে বাংলাদেশ প্রধান দুর্বলতা হল আভ্যন্তরীণ সমজটার অভাব। বাংলাদেশ সাইবার আর্মি, এক্সপায়ার সাইবার আর্মি, বাংলাদেশ ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকার, বাংলাদেশ গ্রে হ্যাট হ্যাকার এবং আন্যোনিমাস বাংলাদেশ এই পাঁচটি বাংলাদেশী হ্যাকার গোষ্ঠীর সাথে একে অপরের মারাত্মক ভাবে দ্বন্দ্ব রয়েছে।
এক্সপায়ার সাইবার আর্মি এর হ্যাক করা মায়ানমার ওয়েবসাইট সমূহে “Fuck BCA” অর্থাৎ বাংলাদেশ সাইবার আর্মির প্রতি যৌনসঙ্গম সহ বিভিন্ন অশ্লীল মন্তব্য করা হচ্ছে ফলে মায়ানমার গোষ্ঠী বাংলাদেশের দুর্বলতা সম্পর্কে জানতে পারছে। এক্ষেত্র “বাংলাদেশ সাইবার আর্মি” বিভিন্ন ভাবে “এক্সপায়ার সাইবার আর্মিকে” কু-মন্তব্য করায় এ ধরনের মন্তব্য “এক্সপায়ার সাইবার আর্মি” করছে বলে জানা যায়। অপরদিকে “বাংলাদেশ ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকার”দের প্রতি বিভিন্ন সন্দেহ প্রবণ মতামত “বাংলাদেশ সাইবার আর্মি” প্রকাশ করায় বেশ কিছু দিন এই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। তবে এখন পরিবেশ বেশ শান্ত আছে বলে ধারনা করা হচ্ছে এবং উভয় দল একটি সমজটা করেছে।
Aluminium Security - এর মতামত এবং সিন্ধান্তঃ
দেশের প্রথম সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান হিসাবে এবং এর স্বার্থে Aluminium Security সরাসরি হ্যাকিং এবং সাইবার যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করতে পারে না। তবে Aluminium Security বাংলাদেশের সকল হ্যাকার গোষ্ঠীকে সব ধরনের সহযোগিতা করতে ইচ্ছুক। আমাদের মাতৃভূমি এই বাংলাদেশের স্বার্থে, “বাংলাদেশ সাইবার আর্মি” এবং “এক্সপায়ার সাইবার আর্মি” -এর অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব সমাধানে উভয় হ্যাকার গোষ্ঠীকে এগিয়ে আসতে Aluminium Security বিশেষভাবে অনুরোধ করছে।
Founder CEO. CTO at Aluminim Security; BornnoLab
Like us: http://facebook.com/as.root.bd
No comments:
Post a Comment